Visit our Facebook fan page Click Here

কতটা বিশাল আমাদের এই মহাবিশ্ব?

কতটা বিশাল আমাদের এই মহাবিশ্ব?
Color :
Size :


মহাকাশের বিশালতা নিয়ে আমাদের কৌতুহলের শেষ নেই। আমরা মহাকাশ সম্পর্কে কতটুকু জানি?।আসলে আমরা মহাকাশ সম্পর্কে খুবই কমই জানি। তবে আমাদের জানার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
প্রযুক্তির বর্তমান বিবর্তনে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ বিগ ব্যাং এর প্রায় পরমুহূর্তেরই চিত্র পর্যবেক্ষণ করতে পেরছে।এ থেকে আমরা বলতে পারি যে, বিগ ব্যাং পরবর্তী প্রায় সম্পূর্ণ মহাবিশ্বই আমাদের দৃষ্টিসীমার মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু মহাবিশ্বের ব্যাপ্তি তার প্রসারণ, আকার-আকৃতি ইত্যাদির মতো আরো কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সত্যি বলতে, বিজ্ঞানীগণ এখনো সঠিকভাবে বলতে পারবে না যে, এই মহাবিশ্বের সঠিক আয়তন কত। কেননা আমরা সাধারণত ততটুকুই পর্যবেক্ষণ করতে পেরছি যেখানকার আলো আমাদের টেলিস্কোপে ধরা দিয়েছে।কিন্তু এমন ও তো কোন নক্ষত্র, ছায়াপথ কিংবা আরেকটি মহাবিশ্ব থাকতে পারে, যেখানের আলো এখনো আমাদের টেলিস্কোপে এসে ধরা দেয় নি!!তাই আমরা মহাবিশ্বের যে আয়তন খোঁজার চেষ্টা করবো তা কেবলমাত্র আমাদের দৃষ্টিসীমার মধ্যেই রয়েছে।

ইউরোপীয়ান মহাকাশ সংস্থা কতৃক পরিচালিত প্ল্যাঙ্ক স্পেস মিশন ২০১৩ সালে মহাবিশ্বের সবচেয়ে পুরনো আলোটির সবচেয়ে নিখুঁত একটি নকশা তৈরি করেছিল।এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের।এ থেকে আমরা ধারণা করতে পারি যে, মহাবিশ্বের বয়স ১৩.৮ বিলিয়ন বছর কিংবা তার বেশী।

সদ্য আবিষ্কৃত পৃথিবী থেকে সর্বাধিক দূরত্বের গ্যালাক্সি যা মহাবিশ্বের মাত্র ৪০০ মিলিয়ন বছর সময়েও ছিলো Credit: National Geographic
বিজ্ঞানীরা এই বয়স হিসেব করেছিলেন মহাবিশ্বের শুরুর দিক থেকে আসা কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড লাইট পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। নাসার মার্কিন বিজ্ঞানী চার্লস লরেন্স এর ভাষ্যমতে, “ কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড লাইট হচ্ছে বহু দূরের পথিক।যখন এটি আসে তখন এটি আমাদের পুরো মহাবিশ্বের গল্প শুনিয়ে যায়।

দূরত্বের সাথে আলোর বেগ এর সম্পর্কের দরুণ আমরা বলতে পারি যে,আমাদের বিজ্ঞানীগণ ১৩.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরের যেকোনো অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম।এটি অনেকটা খোলা বিশাল সমুদ্রের মাঝে একটি জাহাজের মতো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ পৃথিবীতে বসে তাদের টেলিস্কোপ এর সাহায্যে যেকোনো দিকে ১৩.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।এ থেকে আমরা পর্যবেক্ষণীয় মহাবিশ্বকে ১৩.৮ আলোকবর্ষের একটি গোলক হিসেবে বিবেচনা করতে পারি।সেক্ষেত্রে আমাদের পর্যবেক্ষণীয় মহাবিশ্বের ব্যাস প্রায় ২৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ জুড়ে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আবার জানেন যে, মহাবিশ্ব প্রতিনিয়তই প্রসারিত হচ্ছে। তাই বিগ ব্যাং এর সময় যে বিন্দু পৃথিবীতে হতে ১৩.৮ আলোকবর্ষ দূর অবস্থান করেছিল সেটি বর্তমানেও নিশ্চয়ই ওই একই দুরত্বে থাকবে না।

যদি মহাবিশ্বের ইনফ্লেশন কিংবা স্ফীতি একটি ধ্রুব গতিতে ঘটে থাকে, তবে ওই বিন্দু আজ পৃথিবী হতে প্রায় ৪৬ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত!!তাই যদি পৃথিবীকে কেন্দ্র হিসেবে ধরি তবে মহাবিশ্বের সমগ্র ব্যাস দাঁড়ায় প্রায় ৯২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ!! কিন্তু সাগরের মধ্যে একটি জাহাজে থেকে তীরের দেখা না পাওয়ার মানে এই নয় যে জাহাজটি ঠিক সাগরের মাঝখানে রয়েছে।ঠিক একইভাবে আমরা বলতে পারি যে, মহাবিশ্বের শেষ প্রান্ত দেখতে না পাওয়ার মানে এই নয় যে, আমরাই মহাবিশ্বের কেন্দ্রে রয়েছি। তাই বিজ্ঞানীগণ বিভিন্ন উপায়ে মহাবিশ্বের ব্যাপ্তি পরিমাপের চেষ্টা চালিয়েছেন।তাছাড়া মহাবিশ্বের কিভাবে স্ফীতি হচ্ছে সেটিও এক বিশাল রহস্য।যদিও আমরা এই স্ফীতির হার একটি ধ্রুবক ধরে মহাবিশ্বের ব্যাস প্রায় ৯২ বিলিয়ন আলোকবর্ষ হিসেব করেছিলাম, অনেক বিজ্ঞানী মনে করছেন এই হার দিন দিন কমছে।কেননা যদি মহাবিশ্বের স্ফীতি সৃষ্টির শুরুর দিকের মত অর্থাৎ আলোর বেগের সমান হত তবে মহাবিশ্বের বর্তমান ব্যাস হত প্রায় ১০^২৩ আলোকবর্ষ!!!!মিহরান ভার্দানিয়ান এর নেতৃত্বে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর একদল গবেষক বায়েসিয়ান গড় মডেল ব্যাবহার করে সবগুলো পরিমাপের একটি সংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করেন।তাদের হিসেব মতে,বর্তমান মহাবিশ্বের ব্যাস আমাদের পর্যবেক্ষণীয় মহাবিশ্বের চেয়ে অন্তত ২৫০ গুন বেশী এবং তা অন্তত ৭ ট্রিলিয়ন আলোকবর্ষ জুড়ে রয়েছে।

আসলে এটিই সবই অনুমান।
আমরা মহাবিশ্ব সম্পর্কে ১০০ ভাগের ১ ভাগরেও কম জানি।হয়ত ২ ভাগ সম্পর্কে আমরা ধারণা করতে পারি।এবং বাকি ৯৮ ভাগ সম্পর্কে আমরা ধারণাও করতে পারি না।এটায় হল বাস্তবিক আমাদের জানার পরিধি।

Post a Comment

Message via WhatsApp

Send instant messages & product details through Whatsapp.

Money Back

If goods have problem we'll return your good.

24/7 Support

Our dedicated support is available to help you.